বেড়িয়ে এলাম নিউটাউন এর Harinalaya ডিয়ার পার্ক এর থেকে। তারিখ টা ছিল ১৫ ই জুলাই, ২০২৩। বেশ ভালো লাগল। যেসব বাস নিউ টাউন ইকো পার্ক যাচ্ছে তাতে ইকো পার্ক এর ৬ নং গেট এর কাছে নামতে হবে। তবে গাড়িতে গেলে একদম Harinalaya এর গেট এর সামনেই নামা যাবে। টিকেট ৫০ টাকা আর ছোটদের যাদের বয়েস ৫ বছরের কম তাদের জন্য দাম ২০ টাকা। টিকেট কেটে সিকিউরিটি গার্ড কে দিয়ে চেক করিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লাম। ও হ্যাঁ, যেটা লিখতে ভুলে গেছি, বাইরের খাবার ভিতরে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
যাত্রা শুরু করে প্রথমেই দেখা মিললো কালো কাকাতুয়ার। নিজেদের মধ্যে অনেক ডাকাডাকি করছিল। এরপর দেখতে পেলাম স্কারলেট ম্যাকাও পাখি গুলো। এরা সংখ্যায় অনেক গুলো ছিল র বেজায় জোরে ডাকছিলোও বটে। তবে এরা কি বলতে চাইছে আমার মোটা মাথায় ঢোকেনি। তবে পাখি গুলো দেখতে খুবই সুন্দর। মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলার চেষ্টাও করলাম , কিন্তু জাল এর বাইরে থেকে ভিতরের ছবি ভালো এলোনা।
Harinalaya তে এরপর দেখা মিললো একঝাঁক রাজ্ হাঁস এর। ধবধবে সাদা। এদের মধ্যে দুটো কালো হাঁসও ছিলো। এরা সবাই দল বেঁধে হেটে যাচ্ছিলো, দল বেঁধে জলে নামছিল। যেসব ছোটরা গেছিলো সবাই হাঁস দের সঙ্গে খুব মজা করছিল। আমার মেয়েও করছিল। হাঁস বাচ্চা গুলো ক ডাকছে না বাচ্চা গুলো হাঁস কে ডাকছে বুঝতে না বুঝতেই এগিয়ে চলা শুরু করলাম। রাস্তায় পড়লো আমাজন Parrot এর। ভিতর , বাইরে , চারপাশ মিলিয়ে বেশ পরিষ্কার এই লাগল।
এরপর দেখা মিললো দুটো ছোট্ট ছোট্ট জেব্রার। দাঁড়িয়ে দেখতে দেখতেই আকাশ কালো করে বৃষ্টি পড়া শুরু হল। দূরে একটা কাফে দেখলাম, নাম Nature's Cafe। অগত্যা সেখানে ঢুকে পরাই বৃষ্টির থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় ছিলো। বসে বসে বৃষ্টি দেখা আর মোমো খাওয়া, এই করেই কেটে গেলো প্রায় ঘন্টাখানেক মত। ভাবছিলাম আর বোধহয় বৃষ্টি কমবেও না, দেখাও যাবে না বাকি টা ঘুরে। তবে বৃষ্টি টা ঘন্টা দেড়েক পর কমলো। আকাশ টা আরো সুন্দর হয়ে গেছিলো, যেন ধুয়ে মুছে সাফ। পরের গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চললাম। দেখা হলো দুটি কুমির বাবাজির সঙ্গে। একটা জলের মধ্যে অর্ধেক মুখটা বাড়িয়ে আরেকটা ডাঙায় আরাম করছে শুয়ে শুয়ে।
এরপর আমার বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে ভাবলাম। হিপ্পোপটামু, আমার বন্ধু - মানে জলহস্তী। চেহারায় দিন দিন আমি ওর সমগোত্রীয় হয়ে যাচ্ছি তো। কিন্তু কপাল খারাপ। দেখলাম ওকে সরিয়ে রেখে ওর থাকার জায়গায় কাজ হচ্ছে। পাশেই দেখলাম বাঘ আসবে আসবে করবে তার জায়গা বানানো হচ্ছে। ডানপাশে দেখলাম কাপুচিন বাঁদর দোলনায় বেশ লাফালাফি করছে , বিভিন্ন রকম বাঁদরামি করে অঙ্গভঙ্গিও করছিল। মন্দ লাগছিলো না। মেয়েকে রাগানোর জন্যে জিজ্ঞেস করতে গেলাম এগুলো কার বন্ধু বলতো ? কোনো pause না নিয়েই ও বলে দিলো বাবুই এর বন্ধু। আশেপাশে দেখে নিলাম একবার কেউ শুনেছে কিনা? প্রেস্টিজ ইস্যু পুরো। মা আর মেয়ে দেখলাম খুব হাসছে। যাক গে, আমার একদিন বলার দিন আসবে ভেবেই ওদের পিছন পিছন হাটতে শুরু করলাম। এরপর টামারিন এর ঘরটা খালিই দেখলাম।
এবার যাচ্ছিলাম Harinalaya এর সেরা আকর্ষণ হরিণ গুলো দেখতে। অনেক হরিণ, প্রায় ২০ টার মতো স্পটেড ডিয়ার দেখলাম। হরিণ দেখে ফেরার সময় একটা গাছের ফাক দিয়ে ময়ূর দেখতে পেয়ে ভালো করে দেখার চেষ্টা করলাম, যদি পেখম মেলে আর কি। তবে তোমরা দেখতে যেও না যেন, ওটা পাথর এর ময়ূর ছিল , হে হেহে !!! । দেখার সব কিছু শেষ হলো। এরপর কিছু জায়গায় দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার পালা, সবুজ ঘাসে মেয়ের দৌড়োনো আর সবশেষে বৃষ্টির জমা জলে মেয়ের লাফানো এই সব কিছু করতে করতে ৬:৩০ টা বেজে গেল। সময় শেষ , বেড়িয়ে পড়লাম Harinalaya থেকে, সবাই একটা করে কটন ক্যান্ডি বা আমার ভাষায় বুড়ির চুল খেতে শুরু করলাম। আরেকটা সুন্দর দিন কাটলো। Harinalaya আমাদের কলকাতা zoo এর থেকে ভালো বা খারাপ কোনো তর্কে না গিয়ে মন ভরে ঘোরা টা এনজয় করতে করতে বাড়ির দিকে এগোলাম।
পোস্ট টা কেমন লাগলো জানাবে। অন্য পোস্ট এর জন্যে এখানে ভিসিট করতে পারো ।
Egiye cholo Boss. Valo progress hoche lekhar
ReplyDelete